ধূমকেতু নিউজ ডেস্ক : বিয়ের পর থেকেই স্ত্রীর লিঙ্গ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছেন ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের হাফিজুর রহমান। কিন্তু তার স্ত্রী কাজল রেখা নিজেকে নারী বলেই জোর দাবি জানিয়েছেন। একপর্যায়ে ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর হাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে যৌতুকের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী কাজল রেখা। অন্যদিকে কাজল রেখার বিরুদ্ধে পাল্টা মামলা করেন তার স্বামী। এক বছরেও এই বিষয়টিন কোনো সমাধান হয়নি।
সর্বশেষ আদালত নির্দেশনা দিয়েছেন মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ করতে হবে। অভিযোগ করা হচ্ছে, এর আগে মেডিকেল বোর্ডে কাজল রেখার পরিবর্তে অন্য নারীকে হাজির করে লিঙ্গ নির্ধারণ করা হয়েছে। এ অবস্থায় গত ২৭ ডিসেম্বর পুনরায় মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কছে আবেদন জানানো হয়েছে।
সূত্র জানায়, ২০১৭ সালের ১৩ অক্টোবর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া গ্রামের মৃত আজির বক্সের ছেলে হাফিজুর রহমানের সঙ্গে বিয়ে হয় ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের ইসলাম হোসেনের মেয়ে কাজল রেখার। বিয়ের পরে স্বামী হাফিজুর দাবি করেন কাজল রেখা তৃতীয় লিঙ্গের। অন্যদিকে কাজল রেখা নিজেকে স্বয়ংসম্পূর্ণ নারী দাবি করেন। একপর্যায়ে কাজল রেখা যশোর আদালতে পাঁচ লাখ টাকা যৌতুকের অভিযোগে হাফিজুরের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন।
অন্যদিকে, ঝিনাইদহ আদালতে কাজল রেখার বিরুদ্ধে মামলা করেন হাফিজুর রহমান। কাজল রেখার দায়ের করা মামলায় চলতি বছরের ৯ ফেব্রুয়ারি দুই পক্ষ আদালতে হাজির হন। এসময় অন্তবর্তীকালীন জামিন পান হাফিজুর। সর্বশেষ ২২ সেপ্টেম্বর আদালতে হাফিজুর জানান, কাজল রেখা তৃতীয় লিঙ্গের, তার সঙ্গে দাম্পত্য সম্পর্ক হয়নি। জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪র্থ আদালত একপর্যায়ে হাফিজুরের স্থায়ী জামিন মঞ্জুর করেন।
পরে কাজল রেখা জেলা জজ আদালতে রিভিশন আপিল করেন। জেলা জজ আদালত গত ১৩ ডিসেম্বর যশোর জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ককে মেডিকেল বোর্ড গঠন করে কাজল রেখার লিঙ্গ নির্ধারণ করে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
হাফিজুরের আইনজীবী কাজী ফরিদুল ইসলাম বলেন, গত ২৬ ডিসেম্বর যশোর হাসপাতালের ৫ জন চিকিৎসকের সমন্বয়ে গঠিত মেডিকেল বোর্ড ওই দিনই কাজল রেখার মেডিকেল পরীক্ষা করে। কিন্তু হাফিজুর দাবি করছেন কাজল রেখা তার পরিবর্তে তার বোন অথবা অন্য কোনো নারীকে মেডিকেল বোর্ডে হাজির করে পরীক্ষা করিয়েছেন। এ জন্য তিনি প্রথমে কাজল রেখাকে শনাক্ত করে ফের পরীক্ষার জন্য জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক বরাবর গত ২৭ ডিসেম্বর আবেদন জানিয়েছেন।
তবে এ বিষয়ে কাজল রেখার আইনজীবী সরদার সেলিম রেজা বলেন, এসব অভিযোগ আসামির মনগড়া। আদালত যেভাবে নির্দেশনা দিয়েছেন সেভাবেই পরীক্ষা করা হয়েছে। কাজল রেখা নিজে ডাক্তারদের নিকট হাজির হয়েছিলেন।
