ধূমকেতু প্রতিবেদক, লালমনিরহাট : লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলায় যুবলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শ্রেণিকক্ষ দখল করে রাখার অভিযোগ উঠেছে। এতে চরম ভোগান্তিতে পরেছে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ফলে শ্রেণিকক্ষের ক্লাস চলছে কখনো বারান্দায়, কখনো গাছতলায়, কখনোও বা মাঠের খোলা আকাশের নিচে।
ঘটনাটি লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গেলে পাঠদানের এমন অদ্ভুত দৃশ্য দেখা যাবে।
জানা গেছে, দক্ষিণ সিন্দুর্ণা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তিনটি শ্রেণিকক্ষের মধ্যে একটিতে টিচার্সরুম ও অপর দুটি কক্ষ পাঠদানের কাজে ব্যবহৃত হতো। কিন্তু স্থানীয় এক যুবলীগ নেতা ওই দুটি কক্ষের একটি দখল করে তার ঠিকাদারীর সমস্ত মালামাল ফেলে রেখেছেন। ফলে বাধ্য হয়ে বাকি একটি শ্রেণিকক্ষেই এক সাথে চলছে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির পাঠদান। আবার শিশুরা শ্রেণিকক্ষের ক্লাস মাঠের খোলা আকাশের নিচে সম্পন্ন করছে।
বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জানান, বিদ্যালয়ের পুরাতন ভবনে ৩ শ্রেণি কক্ষে আমরা ভাগ করে পাঠদান করে আসছি। কিন্তু ২০১৮-১৯ অর্থ বছরে ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে নতুন ভবন নির্মাণের কাজ শুরু হয়। দীর্ঘ ৪ বছরেও নির্মাণ কাজ শেষ না করে উল্টো পুরাতন ভবনের একটি শ্রেণিকক্ষ দখল করে মালামাল রেখেছেন যুবলীগ নেতা ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। এর ফলে এক শ্রেণি কক্ষেই একসাথে ৩য়, ৪র্থ ও ৫ম শ্রেণির পাঠদানের কার্যক্রম চলছে। এদিকে শিশু শ্রেণির ক্লাস হচ্ছে বিদ্যালয়ের বারান্দায় অথবা মাঠের খোলা আকাশের নিচে। এদিকে করোনা মহামারীতে দীর্ঘ ১৮ মাস সারাদেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকার পর যুবলীগ নেতার শেণিকক্ষ দখলের এমন ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয়রা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম মোল্লা জানান, বিষয়টি একাধিকবার স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে অবগত করেছি কিন্তু তাতে কোনো প্রতিকার পাইনি।
অভিযোগ উঠেছে, ওই নতুন ভবনের নির্মাণ কাজ শেষ না হলেও অধিকাংশ টাকা উত্তোলন করেছেন ঠিকাদার ও হাতীবান্ধা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুল। এ বিষয়ে ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও স্থানীয় লোকজন স্থানীয় সরকার প্রকৌশলী অধিদপ্তর (এলজিইডি)’র সাথে যোগাযোগ করলেও কোনো সফলতা পায়নি।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা যুবলীগের সভাপতি ও নতুন ভবন নির্মাণের ঠিকাদার আব্দুল হামিদ সরকার হামিদুলের সাথে একাধিকবার ফোনে যোগাযোগ করা হলেও তার কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
হাতীবান্ধা উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মিঠুন বর্ম্মণ বলেন, শ্রেণী কক্ষে ঠিকাদার মালামাল রেখেছেন তা আমি জানি না। তবে আমি দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।
হাতীবান্ধা উপজেলা প্রকৌশলী নজির হোসেন জানান, ঠিকাদারকে অনেক চাপ দেয়া হচ্ছে তারপরও তিনি কাজ শেষ করছে না। তবে দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন ভবন খুলে দেয়া হবে।
হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজির হোসেন বলেন, বিষয়টি সত্যিই দুঃখজনক। খোঁজখবর নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিব।