ধূমকেতু প্রতিবেদক, নন্দীগ্রাম : স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলায় লালন পালন করা কোরবানির পশু বিক্রির জন্য এখন রাজধানী ঢাকায় নিয়ে যাচ্ছেন ব্যাপারীরা। অনেক দুরদূরান্ত থেকে ব্যাপারীরা এসে উপজেলার বিভিন্ন হাট বাজার থেকে পশু কিনে অধিক লাভের আশায় ওই পশুগুলো রাজধানী ঢাকার হাটে নিয়ে যাচ্ছে।
শুধু ব্যাপারীরাই না এ উপজেলার অনেক কৃষক ও খামারি তাদের পোষা পশু বিক্রির জন্য রাজধানীর বিভিন্ন হাটে নিয়ে যায়। কয়েকজন কৃষক বা খামারি মিলে গাড়ী ভাড়া করে তাদের কোরবানির জন্য লালন পালন করা পশুগুলোকে নিয়ে যায় ঢাকার হাটে। এতে তাদের লাভ বেশি হয় বলে জানিয়েছে কৃষক ও খামারিরা।
নন্দীগ্রাম উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস সূত্রে জানা গেছে, কোরবানি উপলক্ষে এ উপজেলায় কৃষক ও খামারিরা মিলে প্রায় ৪৯হাজার ১৭১টি পশু লালনপালন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে গরু, মহিষ, ভেড়া ও ছাগল। এ উপজেলার কোরবানির চাহিদা মিটিয়ে বাড়তি পশুগুলো দেশের বিভিন্ন এলাকায় চলে যায়।
শুক্রবার সরেজমিনে উপজেলার সবচেয়ে বড় পশুর হাট নন্দীগ্রাম সদর ইউনিয়নের রণবাঘায় গিয়ে দেখা গেছে, রণবাঘা হাটে বগুড়া-নাটোর মহাসড়কের দুই পাশে সারি সারি ডিজেল চালিত ভটভটি, পিকাপ ভ্যান ও ট্রাক। ব্যাপারীদের কেনা গরুগুলো পিকাপ ভ্যান ও ট্রাকে তুলছেন। কেউ কেউ চাহিদা মতো আরও গরু কিনছেন হাটে। এছাড়া এ উপজেলা ও পাশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে আসা মানুষ কোরবানির পশু ক্রয়-বিক্রয় করছেন।
রণবাঘা হাটে আসা গরুর ব্যবসায়ী ইসমাইল হোসেন বলেন, আমি ৮-১০ বছর হলো গরুর ব্যবসা করি। কোরবারির সময় ১০০-১৫০ গরু কিনে ঢাকার হাটে নিয়ে যাই। কোন কোন বছর ভালই লাভ হয়। গরু মরে না গেলে কমবেশি লাভ হবেই। রণবাঘা হাট থেকে ৬টি গরু কিনেছি। আমার লোকেরা আরো গরু কিনছে। শনিবার রাতে আমার গরুর গাড়ী ঢাকায় যাবে।
কোরবানি কিনতে হাটে আসা তৌফিক এলাহী জানান, মাঝারি আকারের গরুর দাম বেশি। আমি ভাবছি ৬০-৭০ হাজার টাকার মধ্যে একটা গরু কিনব। এখনও সেভাবে গরু মিলাতে পারছিনা। আজকেই গরু কিনতে হবে। আজকে ছাড়া আমাদের এলাকায় আর বড় হাট নাই।
হাটে ষাঁড় বিক্রি করতে আসা মখলেছুর রহমান বলেন, যে খরচ গরু পালার, সে তুলনায় লাভ বেশি নাই। আমি দুইডা গরু হাটে বিক্রি জন্য আনছি। একটা ১লাখ ৮ হাজার টেকা দিয়ে বিক্রি করছি। এইডার দাম ৮০ হাজার টাকা কয়। দেখি আর একটু দাম হয় নাকি।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা কল্পনা রাণী রায় বলেন, প্রণিসম্পদ অফিস হতে এ উপজেলার খামারি ও কৃষকদের পশু মোটাতাজা করার জন্য বিভিন্ন ভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অফিস থেকে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ কৃষক ও খামারিদের প্রদান করা হয়েছে। পশু পরীক্ষার জন্য হাটে প্রণিসম্পদ অফিসের টিম রয়েছে। তাঁরা পশুর রোগ ও পেটে বাচ্চা আছে কি না তা পরীক্ষা করে দিচ্ছে।